
লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধিঃ লক্ষ্মীপুরে সাংবাদিক আব্বাছ হোসেনকে গুলি করে হত্যার হুমকি দিয়েছে দূর্বৃত্তরা। এঘটনায় সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। হুমকির প্রতিবাদ ও জড়িতদের চিহিৃত করে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন, জেলায় কর্মরত সাংবাদিকরা। এছাড়াও হুমকির ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিকদলের নেতাসহ বিভিন্ন পেশাজীবি সংগঠনের নেতারা।
সোমবার সন্ধ্যায় ৫টা ৫৭মিনিট থেকে ৬টা ২ মিনিট পর্যন্ত +৮৮০৯৬৪৭৫৬৭৭৪, +৯৭১৫৩৪১৩৮১৮৩, +৯৭১৫৫৪৪৯৩৭০৯, +৯৭১৫২৩৫০২৫৩৭ এ চারটি নাম্বার থেকে ০১৭১৬৪৯৪৩৩৪ এই নাম্বারে একাধিবার কল আসে।
এসব নাম্বার থেকে কল দিয়ে সাংবাদিক আব্বাছ হোসেনকে অকাথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও গুলি করে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। হুমকি দেওয়া হয় পরিবারের লোকজনকেও।
এঘটনায় রাতে সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। সাংবাদিক আব্বাছ হোসেন, লক্ষ্মীপুর থেকে নিয়মিত প্রকাশিত দৈনিক মেঘনার তীর পত্রিকার প্রকাশ ও সম্পাদক। এছাড়া ইনডিপেনডেন্ট টিভির স্টাফ রিপোটার, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) ও দৈনিক আজকের পত্রিকায় জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
জেলায় কর্মরত সাংবাদিকরা জানায়, লক্ষ্মীপুরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে একাধিক প্রতিবেদন, মাদক-অনিয়ম ও দূনীর্তি ও আইনশৃঙ্খলার উন্নয়নে বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। পাশাপাশি গত কয়েকদিনের ইটভাটার অভিযান,সন্ত্রাসীও মাদক কারবারীদের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন করার কারণে এমন হুমকি আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কিন্তু হুমকি-ধুমকি দিয়ে সাংবাদিকের কলম বন্ধ করা যাবে না। রিপোর্ট থামানোর জন্য কোনো হুমকি কাজে আসার সুযোগ নেই বলে মনে করেন সাংবাদিক সমাজ। অনতিবিলম্বে জড়িতদের চিহ্নিত করে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান সাংবাদিকসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ।
সাংবাদিক আব্বাছ হোসেন বলেন, মোবাইল ফোনে একাধিকবার গুলি করে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। এঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান তিনি। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
লক্ষ্মীপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি জহির উদ্দিন উক্ত ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, অনতিবিলম্ভে হুমকিদাতাকে গ্রেপ্তার করতে হবে। হুমকি-ধুমকি দিয়ে সাংবাদিকদের কলম বন্ধ করা যাবে না। দ্রুত সময়ে হুমকি-দাতাকে চিহিৃত করে গ্রেপ্তার করতে হবে। অন্যথায় কঠোর কর্মসুচি দেওয়া হবে।
এদিকে লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি হোসাইন আহমদ হেলাল এঘটনার প্রতিবাদ ও তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, হুমকি দাতাকে বের করতে হবে। এঘটনায় পুরো সাংবাদিক সমাজ ক্ষুদ্ধ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রশাসন হুমকি দাতাকে বের করতে ব্যর্থ হলে সাংবাদিক সমাজ মাঠে নামবে। কোন হুমকিড়-ধুমকি দিয়ে লাভ নেই। অন্যায়ের বিরুদ্ধে সাংবাদিকের লিখনি চলবে। এটি বন্ধ করা যাবে না।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবদুল মোন্নাফ বলেন, হুমকির ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। হুমকি দাতাকে চিহিৃত করার কাজ চলছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে জড়িত ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা হবে। সাংবাদিক সমাজের সঙ্গে আইনশেৃঙ্খলা বাহিনী সবসময় পাশে ছিল, আছে এবং থাকবে।
পুলিশ সুপার মো. আকতার হোসেন বলেন, বিষয়টি গুরত্বসহকারে নেওয়া হয়েছে। হুমকিদাতাকে চিহ্নিত করার কাজ চলছে। আশা করি দ্রুত সময় তা সনাক্ত করা যাবে বলে জানান তিনি। সাংবাদিকদের নিরাপত্তায় সব সময় পাশে আছে জেলা পুলিশ।
